
বর্তমান সময়ে আমাদের চারপাশে যে মহামারির কথা শুনছি তা হলো ডায়াবেটিস; আমরা পারছি না কোনভাবেই একে এড়িয়ে চলতে। আমাদের আশেপাশে খোজ করলেই পাওয়া যায় এই রোগিকে; ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে ৯টি প্রমানিত-উপায়
চিকিৎসা বিজ্ঞান যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে এই ডায়াবেটিস রোগের প্রতিষেধক আবিস্কারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য জরিপে দেখা যায়, ১৯৮০ সালে বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিল ১০ কোটি ৮০ লাখ আর এখন তা আজ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ কোটি ২০ লাখ। ফলাফল দেখে বোঝা যায় সামনের দিনগুলি মানুষের জন্য কতটা ভয়াবহ হতে চলেছে।
ডায়াবেটিস বলতে আমরা বুঝি যে এটি একটি বিপাকীয় প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট রোগ। ফলে দেহ যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়ে বা ইনসুলিনকে প্রত্যাখ্যান করে। এতে রক্তে সুগারের মাত্রা প্রচুর পরিমানে বেড়ে যায়।
রক্তে সুগারের মাত্রা যদি বেড়ে যায় তবে দেহে ক্লান্তি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার হ্রাস, ঘন ঘন প্রস্রাব, এবং দেহের ক্ষত স্থান শুকাতে দেরি হয় প্রভৃতি।
জানুনঃ আপনার অজান্তেই মোবাইলের টাকা খোয়া যাচ্ছে না তো!!
ডায়াবেটিস রোগের একটি দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো এই রোগ পুরোপুরি ভালো হয় না। তবে সুখের কথা এই যে এর লক্ষণগুলো দূর করা যায় এবং নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
এমন কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো নিয়মিতভাবে মেনে চললে জীবনে কখনো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকবে না। তবে শর্ত থাকে যে পরিবারের কোন সদস্যের ডায়াবেটিস থাকা চলবে না।
চলুন জেনে নেয় ৯টি উপায়ঃ
১. স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
দেহের ওজন স্বাস্থ্যকর মাত্রায় নিয়ন্ত্রিত রাখার মধ্য দিয়ে শুধু ডায়াবেটিসই নয় বরং আরো নানা ধরনের রোগ বালাই থেকে মুক্ত থাকা যায়। স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৭০% কমে আসবে।
২. প্রচুর হাঁটাহাঁটি করুন
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক সেরা ব্যায়ামগুলোর একটি হাঁটাহাঁটি; প্রতিদিন অন্তত ৪০মিনিট হাঁটাহাঁটি করলেই আপনার বিপাকীয় হার এমন পর্যায়ে থাকবে যা আপনার দেহে ইনসুলিনের মাত্রাকেও ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় রাখতে যথেষ্ট। ফলে ডায়াবেটিসেরও ঝুঁকিও কমে আসবে।
৩. পূর্ণ শস্যজাতীয় খাদ্য খান
ওটমিল, বার্লি, ব্রাউন রাইস, ভুট্টা, বাজরা ইত্যাদি পূর্ণ শস্য জাতীয় খাদ্য দিয়ে সকালের নাস্তা করুন। পূর্ণ শস্য জাতীয় খাদ্যে আছে আঁশ, যা রক্তে সুগারের মাত্রা কমাতে সহায়ক; ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমে। এছাড়া পূর্ণ শস্যজাতীয় খাদ্য কোষ্ঠকাঠিন্য, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি রোগ থেকেও বাঁচাবে।
৪. কফি পান করুন
বেশ কিছু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, প্রতিদিন অন্তত দুই কাপ কফি পান করলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে আসে ২৯%; তবে চিনি ছাড়া কফি পান করতে হবে। কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান এই কাজ করে।
৫. সালাদ খান
প্রতিদিন অন্তত এক বাটি সালাদ খান। যার মধ্যে থাকবে গাজর, শসা, লেটুস, টমেটো, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি; প্রতিদিন দুপুরে বা রাতে খাবার খাওয়ার আগে এই সালাদ খেতে হবে। সালাদে এক চা চামচ ভিনেগারও যুক্ত করতে পারেন; ভিনেগার রক্তকে কমমাত্রায় সুগার শোষণে সহায়তা করে। আর রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমবে।
জানুনঃ যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়!
৬. দারুচিনি খান
দারুচিনি তেল বা পাউডার আকারে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে আসে ৪৮%! গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, দারুচিনির আছে অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড এর মাত্রা কমিয়ে আনার প্রাকৃতিক সক্ষমতা; আর এই দুটি উপাদান প্রাকৃতিক ভাবে কমিয়ে আনতে পারলে রক্তে সুগারের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমে আসে।
৭. ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন
আজকাল চাইলেই হাতের কাছে পাওয়া যায় নানা ধরনের ফাস্টফুড; যা দেখে হয়তো লোভ সামলানো অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে; কিন্তু ফ্রাইস, পিজ্জা, বার্গার এর মতো ফাস্ট এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার খেলে স্থুলতা, উচ্চ কোলেস্টেরল, হজমে সমস্যা এবং হৃদরোগের মতো নানা রোগ দেখা দিতে পারে; এসব খাবার দেহে ইনসুলিনের মাত্রায়ও ক্ষতিকরভাবে হেরফের ঘটিয়ে দিতে পারে। যা থেকে ডায়াবেটিসও হতে পারে।
৮. ধুমপান ত্যাগ করুন
স্ট্রেসের মতোই ধুমপানও নানা ধরনের মারাত্মক রোগের আরেকটি কারণ। ফুসফুস ক্যান্সার এর মতো ভয়ঙ্কর রোগের পাশাপাশি ডায়াবেটিসেরও একটি কারণ ধুমপান; সুতরাং ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে না চাইলে আজই ধুমপান ছেড়ে দিন।
৯. স্ট্রেস বা মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকুন
মাথা ব্যথা থেকে শুরু করে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগও হতে পারে অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে; সুতরাং আপনি যদি এমন কেউ হন যিনি প্রায়ই তীব্র মানসিক চাপে থাকেন তাহলে রিল্যাক্স করার নানা কৌশল এবং যোগ ব্যায়াম করে স্ট্রেস কমান। এতে আপনার দেহে কর্টিসোল হরমোনের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে ৯টি প্রমানিত-উপায়
জানতে পারেন আরোঃ
(১)