
বর্তমানে সারা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের কাছে এখন খুব জনপ্রিয় একটা ওয়েবসাইটের নাম এই ফেসবুক; ঠিক এরকম পরিস্থিতিতে আপনার ফেসবুক এ্যাকাউন্ট ডিলিট করা জরুরী, জরুরী হলে কেন? জানুন তার আদ্যোপান্ত।
আরেক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার থেকে পাওয়া এমনই একটি বার্তা তা হলো “আমরা সবাই যেমন মাইস্পেস থেকে সরে এসেছি, তেমনি ফেসবুক থেকেও সরে যেতে পারি।”
অন্য একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রেই রয়েছে পাঁচ কোটিরও বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী; আর ফেসবুক সেই ব্যবহারকারীর প্রদত্ত গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তিগত তথ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটারদের প্রভাবিত করার নিমিত্তে ব্যবহার করা হচ্ছে- এরকম অভিযোগ উঠার পর এখন এধরনের আহবান সবার চোখে পড়ছে।
উক্ত অভিযোগটি উঠে এসেছে লন্ডন-ভিত্তিক ব্রিটিশ একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার বিরুদ্ধে; তাদের অভিযোগ হলো এই প্রতিষ্ঠানটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে ব্যবহার করেছিল।
উক্ত অভিযোগটি খবর হিসেবে প্রকাশিত হওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যারা ব্যবহারকারীর কেউ কেউ তারা হ্যাশট্যাগ দিয়ে একটি প্রচারণা চালাতে শুরু করে দেন। যেমন #বয়কটফেসবুক অথবার #ডিলিটফেসবুক প্রভৃতি।
আবার এই আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছে বর্তমানে ফেসবুকেরই মালিকানা প্রতিষ্ঠান হোয়াটসএ্যাপ এর প্রতিষ্ঠাতাদের একজন সদস্য জনাব ব্রায়ান একটনও।
জানতে পারেন নিচের খবরগুলিঃ
(১) যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়!
(২) আপনার অজান্তেই মোবাইলের টাকা খোয়া যাচ্ছে না তো!!
(৩) গায়ে হলুদ হলো কিন্তু হলো না বিয়ে
জানা যায় তিনি হোয়াটসএ্যাপ ১৯ বিলিয়ন ডলারে ফেসবুক প্রতিষ্ঠান কিনে নেওয়ার প্রায় তিন বছর পর তিনি হোয়াটসএ্যাপ প্রতিষ্ঠানটি ছেড়ে চলে যান।
সামাজিক মাধ্যম টুইটার ব্যবহারকারীদের একজন এই প্রচারণা চালাতে গিয়ে গত বছরের বিবিসির একটি স্টোরিও টুইট করেছেন।
জানা যায়, ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকার ব্যাপারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণার সাথে জড়িত ছিলেন এরকম গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার থেকে তিনি চারটি উদ্ধৃতি তুলে ধরেছেন।
এর কারন নাকি ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মি. ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার ব্যাপারে ফেসবুকের ভূমিকা সংক্রান্ত অভিযোগ সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ ধারণা দেওয়ার জন্য।
তিনি এখানে বলেছিলেন যে, “ফেসবুক আমাদের একটি নির্বাচনী সহোযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছেন”; আর “ফেসবুক ছাড়া আমরা জিততে ও পারতাম না।”
তারপর থেকে অনেক কেই বলতে শোনা যাচ্ছে; এই ঘটনার পর থেকে অনেকেই হয়তো অনেকে চিন্তা করতে পারেন ফেসবুক ছেড়ে চলে যাবার; আবার যারা হ্যাশট্যাগ দিয়ে “ডিলিট ফেসবুক” বা বয়কট ফেসবুক প্রচারণা চালাচ্ছেন তারাও সেখানে প্রচুর লাইক পাচ্ছেন।
আবার অনেকে বলছেন, একটি সামাজিক মাধ্যমে আরেকটি সামাজিক মাধ্যমের এরকম নিন্দা করার বিষয়টি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সেখানে একজন কৌতুক করে মন্তব্য করেছেন, “ফেসবুক ডিলিট করতে অনেকে বলছেন যেটা টুইটারে হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রচার চলছে- আরেকটি সোশ্যাল মিডিয়া তার ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে।”
আরেকজন তার কমেন্টে বলেছেন, “যেহেতু ফেসবুক যৌথভাবে ইন্সটাগ্রামেরও মালিক, তাহলে তো একটি ডিলিট করতে আপনাকে অন্যটিও ডিলিট করতেই হবে।”
তবে ফেসবুক এর বিরুদ্ধে তার ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য যেভাবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে সেরকম কোন অভিযোগ কিন্তু টুইটার কিংবা ইনস্টাগ্রামের নামে এখনও করা হয়নি।
এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা আরো বাড়ানোর পরামর্শ ও দিয়েছেন।
তবে প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান এর একজন মুখপাত্র; সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে, সবার মাঝে এসব তথ্যের গোপনীয়তার ব্যাপারে যে উদ্বেগ সেটা শুধু ফেসবুকের মধ্যেই সীমিত নেই; কারণ “আপনার ব্যক্তিগত তথ্য কিন্তু সবসময়ই ব্যবহার করা হচ্ছে।”
এবিষয়ে আরেকজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ফেসবুক ডিলিট করে দিলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না; কারণ অনলাইনে এসব তথ্যকে এখনও পর্যন্ত খুব একটা সুরক্ষা দেওয়া হয়নি। আপনার ফেসবুক এ্যাকাউন্ট ডিলিট করা জরুরী, কেন?
[Total_Soft_Gallery_Video id=”1″]