
কিশোর বয়স থেকেই আমাদের মনে একটা আকাঙ্খা থাকে তা হলো গাড়ি অথবা মোটর সাইকের; আমাদের তরুন প্রজন্ম তো একটা সময় ঘুমের ঘোরেই মোটর সাইকেল রেইচ করে। কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনতে যেসব বিষয় জানা জরুরী!
এটা সবার জানা। তরুন বয়সের ভাবনায় একটা বিষয় থাকে মোটর সাইকেল যেন তারুন্যের প্রতীক; তবে দুই চাকার চমৎকার দ্রুতগামী এই যানটি শুধু চলাচলের জন্যই নয় এটি হয়ে উঠেছে উদ্দম ও স্বাধীনতার অপর নাম।
তবে কিছু ক্ষেত্রে মোটরবাইক শুধু যৌবনের শখ কিংবা বিলাসিতা নয়, হয়ে ওঠে নিত্যকার দরকারী পণ্যও; বিশেষত ঢাকার মতো জনবহুল শহরে, যে শহরে সিটি বাসগুলো অফিস টাইমে হয়ে ওঠে নরকের অন্য নাম।
অথচ তরুণ যারা এখনো ছাত্র কিংবা সদ্য যোগদান করেছে কোন চাকরীতে কিংবা কোন ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার প্রচেষ্টায় সংগ্রাম করছে প্রতিদিন, তাদের কোন উপায় থাকে না, নারকীয় অভিজ্ঞতার পরও প্রতিদিন লোকাল বাসে ঝোলা ছাড়া।
এ অবস্থায় গাড়ি কেনা তো প্রায়ই অসম্ভব, আর আজকাল ঢাকার মতো জ্যামের নগরীতে গাড়ি খুব একটা কার্যকর উপায় বলেও মনে হচ্ছে না। মোটরসাইকেলই তাই শেষ ভরসা, এই দ্বি-চক্র যানটি নিয়ে তরুনদের মনে অদম্য আগ্রহতো রয়েছে বেশ আগে থেকেই।
জানুনঃ
(১) যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়!
(২) মজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন এখন যুবলীগ এর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
(৩) কানাডায় জব না ইমিগ্রেশন কোনটি আগে দরকার?
এমন দ্বিমুখী সমস্যার চমৎকার সমাধান হতে পারে কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনতে পারা। আমাদের অনেকের মনেই একটি প্রশ্ন আছে সেটা হলো, কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনতে চাই – কি করনীয়?
কী করণীয় তা জানার আগে মোটরসাইকেল কিস্তিতে কেনার সুবিধা এবং অসুবিধাগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে নিলে মন্দ হয় না।
কিস্তিতে মোটর সাইকেল কেনার অসুবিধা সমূহঃ
- কিস্তিতে মোটর সাইকেল কিনতে সাধারনত বাজার মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য দিতে হয় সাথে বেশি ইন্টারেষ্ট গুনতে হয়;
- বাইকের ঝুকি সব গ্রহীতাকেই বহন করতে হয়, বাইকের কোন ক্ষতি হলে অথবা চুরি হলেও সেটার জন্য কোন ক্ষতিপুরণ পাবার সম্ভাবনা থাকে না।
- মানষিক দুঃচিন্তা যেমন সম্পুর্ণ টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত আপনাকে মানসিক চিন্তাগ্রস্থ অবস্থায়ই থাকতে হয়।
কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার সুবিধা সমূহঃ
- অল্প টাকায় যেকোন ব্র্যান্ডের মনোরম মোটর বাইক কেনা যায়।
- এককালীন বেশি টাকা খরচ হয়না তাই অনেকেই এভাবেই মোটরবাইক ক্রয় করে থাকে।
- অত্যাধুনিক ফিচারের বাইক নেওয়া যায় অল্প বিনিয়োগেই তাই এটি জনপ্রিয়।
- বিনিয়োগ কম তাই স্বল্প সময়ের মধ্যে পছন্দের বাইকটি সহজেই কেনা সম্ভব।
উল্লিখিত সুবিধা ও অসুবিধাগুলো বিবেচনা করে নিয়ে নিজের জীবনযাত্রার সাথে তুলনা করে যেটি আপনার জন্য উপযোগী এবং ঠিক এই মুহূর্তেই যদি আপনার মোটরসাইকেল কেনা কোনটি সর্বোচ্চ জরুরী, সেটা বিবেচনা করুন।
মোটর সাইকেল কেনা টা যদি জরুরী হয়ে থাকে, তাহলে নিচের তথ্য সমূহ হতে পারে আপনার জন্য নিশ্চিত উপকারী একটা বিষয়।
বাংলাদেশে এখন অধিকাংশ মোটর সাইকেল কোম্পানিতেই কিস্তি পদ্ধতি অনুস্বরণ করে বাইক বিক্রি করছে। আপনি যদি চাই তাহলে আপনার প্রিয় মোটর সাইকেলটি কিনে নিতে পারেন কিস্তিতে।
কারন কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনা টায় আপনার কাছে সহজ মনে হচ্ছে হয়তো; এবার জেনে নিন মোটর সাইকেল কিনতে হলে আপনাকে অবশ্যই কি কি ডকুমেন্ট নিজেয় আসতে হবে, চলুন সেব্যাপারে কিছু আলোচনা করা যাক—-
এটা ঠিক প্রতিটা কোম্পানী তাদের মোটর সাইকেল বিক্রয়ের প্রক্রিয়াসমূহ ভিন্ন ভিন্ন রকম হয়ে থাকে; তবে কিছু নিয়ম কিন্তু একই হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে বর্তমানে বাজাজ, টিভিএস, হিরো, রানার, ইয়ামাহা প্রভৃতি কোম্পানীর বাইক পাওয়া যাচ্ছে; এসব কোম্পানিগুলো তাদের বিক্রয় বাড়াতে বাইকারদের বিভিন্ন ধরনের কিস্তির মাধ্যম দিয়ে মোটরসাইকেল কেনার সুবর্ণ সুযোগ করে দিচ্ছে।
ফলে একজন বাইকার যদি চাই তবে খুব সহজে তার পছন্দের বাইকটিই কিনতে পারবেন তা মোটর বাইকটির জন্য বাজেটের কথা না ভেবেই।
তবে যেহেতু মোটর সাইকেল ব্র্যান্ড, কোম্পানি আর মডেলের ক্ষেত্রে কিছু ভীন্নতা থাকেই, তবুও কিছু বাইকের সহজ প্রাপ্তিতে কিছু ব্যাপার সব ক্ষেত্রে একই রকম।
বেসিক এই ব্যাপার গুলো জানা থাকলে কাজটা যেমন সহজ হয়ে যায় তেমনি অনেক ধরণের ঝক্কি-ঝামেলার থেকে দূরে থাকা যায়।
চলুন দেখে নেয়া যাক কিস্তিতে মোটর সাইকেল কিনতে সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রের তালিকা:
১.পরিচয়পত্র
পরিচয়পত্র হিসেবে সবচেয়ে বেশি গ্রহনযোগ্য জাতীয় পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্ট; কিছু ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা পারসোনাল ট্রেড লাইসেন্স দিয়েও কাজ চালানো যায় তবে বর্তমানে সরকারী কড়াকড়ি থাকায় সব ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রায় বাধ্যতামূলকভাবেই রাখা হচ্ছে।
২. ঠিকানার প্রমাণ দলিল
আপনাকে অবশ্যই একটি ঠিকানা দিতে হবে যেখানে আপনার সাথে প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করা যাবে; আর ঠিকানাটা যে আপনারই, তার প্রমাণপত্র হিসেবে কোনও এক মাসের ইউটিলিটি বিল যেমন, বিদ্যুৎ বিল, টিএন্ডটি বিল,পানি অথবা গ্যাস বিল; (অবশ্যই শেষ তিন মাসের বিলের কাগজ হতে হবে, তার আগের কাগজ গ্রহনযোগ্য হবে না।)
৩. ব্যাংক স্টেটমেন্ট
সর্বশেষ ০৩ থেকে ০৬ মাস ব্যাংকের বিবৃতি বা কেবল সক্রিয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অথবা বিবৃতি বাধ্যতামূলক কিংবা ব্যাংক সলভেন্সি প্রশংসাপত্রও গ্রহণযোগ্য।
৪. কর্মচারী প্রমানের দলিল (ব্যবসায়ী)
আপডেট ট্রেড লাইসেন্স জমা দিতে হবে, তবে সেটা চলমান এক বছরের না হলেও চলে।
৫. কর্মচারী প্রমানের ডকুমেন্টস
আপনি যদি চাকুরীজীবি হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে অন্তত তিন মাসের বেতন তোলার রশিদ প্রয়োজন হবে; কিছুক্ষেত্রে আপনার ডিপার্টমেন্ট হেডের সাক্ষরিত অনুমোদন পত্রের দরকারও হতে পারে।
পেমেন্টের ধরণ
এমআইসিআর চেক বা একটি সিকিউরিটি এমআইসিআর / নন এমআইসিআর চেক (অনলাইন শাখা) প্রাপ্ত (তারিখ ব্যতীত); নগদ ডিএস / বিকাশ / রকেট দ্বারা মাসিক Installment সংগ্রহ করা হয়ে থাকে।
গ্যারান্টারের বিকল্প
দুর্বল পক্ষের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, গ্যারান্টরকে জিজ্ঞাসা করুন; গ্যারান্টারের কাছ থেকে প্রাপ্যগুলি জিজ্ঞাসা করুন (গ্যারান্টর ফটো, এনআইডি কপি, পোস্ট তারিখের চেক সরবরাহ করবে, গ্যারান্টার এফিডেভিট ২০০ টাকার স্ট্যাম্প পেপারে লেখা থাকবে (নোটারিযুক্ত অনুলিপি)।
কোম্পানির ধরণ
লেটার হেড এবং পোস্ট তারিখের চেকের উপর গ্যারান্টর এফিডেভিট সরবরাহ করবে সংস্থা।
বেসিক এই ব্যাপারগুলো মাথায় রাখলে আপনি নিজে নিজেই কিস্তিতে মোটরসাইকেল কেনার প্রক্রিয়াগুলো এগিয়ে নিতে পারবেন।
তবে কিস্তিতে কিংবা নগদে যেভাবেই মোটরসাইকেল কিনুন না কেন; কিনতে যাওয়ার আগে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করুন, কারণ এখন ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই এমন কারো কাছে মোটরসাইকেল বিক্রি আইনত দন্ডনীয়।
আর মোটরসাইকেল কেনার পর সেটি রেজিষ্ট্রেশন প্রক্রিয়াটিও দেখে নিতে পারেন যা আপনাকে সাহায্য করবে দালাল না ধরেই নিজে নিজেই কাজগুলো সম্পন্ন করে ফেলতে। কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনতে যেসব বিষয় জানা জরুরী!