মজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন এখন যুবলীগ এর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
টানা দুই দফায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে ফরিদপুরের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া মজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন এখন যুবলীগ এর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার বিকালে যুবলীগের ২০১ সদস্যের একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন; সেখানে নিক্সন চৌধুরীকে রাখা হয়েছে ২৭ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীতে ৮ নম্বরে।
ফরিদপুর-৪ আসনে এতদিন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহর বিপক্ষে দাঁড়িয়ে নির্বাচন ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন নিক্সন চৌধুরী; সেখানে তিনি ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনে দুই দুইবার তিনি স্বতন্ত্র হিসেবে জয়লাভ করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর এলাকা নামে খ্যাত বৃহত্তর ফরিদপুরে বরাবরই আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাটি হিসেবে পরিচিত; ফরিদপুর-৪ আসন থেকেও স্বাধীনতার পর থেকেই বরাবর আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই জয়লাভ করে আসছেন।
উক্ত আসনে আওয়ামী লীগের একচেটিয়া আধিপত্য থাকা সত্যেও জাফর উল্যাহ ২০০৮ সালে নির্বাচন করতে পারেন না; পরবর্তীতে তার স্ত্রী নিলুফার জাফর আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তারপর থেকেই উত্থান ঘটে বঙ্গবন্ধুর বড় বোন ফাতেমা বেগমের নাতিছেলে মজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সনের; নিক্সনের বাবা ইলয়াস আহমেদ চৌধুরী মাদারীপুরের শিবচরের সাংসদ ছিলেন; তার ভাই নূরে আলম চৌধুরী (লিটন চৌধুরী) এখন উক্ত আসনে এমপি হিসেবে কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন, তিনি এখন জাতীয় সংসদে চিফ হুইপ হিসেবে দায়িত্বরত।
তিনি ২০১৪ সালে প্রথম স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন; তবে সেবার বিএনপিবিহীন নির্বাচনে নিক্সন চৌধুরী নির্বাচিত হয়েছিল বিধায় তার জনপ্রিয়তা সেভাবে বোঝা যায়নি।
কিন্তু ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি আবারও সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটান।
এরমধ্যে নিক্সন চৌধুরী বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠনেতা কাজী জাফর উল্যাহকে বিষোদগার করে বক্তব্য দিয়ে আলোচনায় চলে আসেন ।
সম্প্রতি ফরিদপুরের চর-ভদ্রাসন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে ধমকানোর অভিযোগ ওঠে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
জানুনঃ
(১) যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়!
(২) ভূয়া নিবন্ধন সনদে শিক্ষকতার অভিযোগ
গত ১০ অক্টোবর ভোটের দিন সকালে তিনি চরভদ্রাসনের ইউএনওকে ফোন করে ধমক দেন আর আরেকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে ‘শুয়োরের বাচ্চা’ আখ্যায়িত করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগ ওঠে; তার ওই টেলিফোন আলাপের অডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা।
এই ঘটনা ছাড়াও ওই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসককে ফোন করে ‘অশোভন আচরণ’ ও হুমকি দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা হয়; পরবর্তীতে হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নেন নিক্সন চৌধুরী।
যুবলীগের কমিটিতে স্থান পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যুবলীগ সভাপতি পরশকে ধন্যবাদ জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন নিক্সন চৌধুরী।
এত বিতর্কের পর এখন তাকে যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য করার বিষয়ে; সংগঠনটির সভাপতি ফজলে সামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিলকে একাধিকবার ফোন করেও কোন তারা সাড়া পাওয়া যায়নি।
নিক্সন চৌধুরী বলেন, “যুবলীগের সাংগঠনিক নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে সামস পরশ আমাকে যুবলীগে অন্তর্ভুক্ত করেছেন; আমি উনাদের আমার অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই।
“আমাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তা আমি নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব। যুবলীগে অতীতের দুর্নাম মুছে সারা দেশের যুবলীগের ভাবমূর্তি ফেরানোর জন্য কাজ করে যাব।”
মজিবর রহমান চৌধুরী নিক্সন এখন যুবলীগ এর সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য।
- Published in Breaking News, FEATURED, খবর, সারাদেশ