ট্রাম্পকে একেবারেই নিষিদ্ধ করে দিল টুইটার।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্পকে টুইটার কর্তৃপক্ষ স্থায়ীভাবে সাসপেন্ড করেছে। টুইটার বলছে, “ভবিষ্যতে সহিংসতা উস্কে দেবার ঝুঁকি” থাকার কারণে তারা এমন কাজ করেছে। ট্রাম্পকে একেবারেই নিষিদ্ধ করে দিল টুইটার।
তারা বলছে “@realDonaldTrump অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট গুলো নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে ও সেই এ্যাকাউন্টকে ঘিরে যে প্রেক্ষাপট তৈরি” হয়েছে এগুলির ভিত্তিতে তারা এই সিদ্ধান্তটি নিয়েছে।
টুইটার কর্তৃপক্ষ মি. ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টটি এর আগে ১২ ঘণ্টার জন্য অচল করে রেখেছিল।
তখন টুইটার সতর্ক করে বলেছিল, যদি তিনি এই প্ল্যাটফর্মের নিয়মনীতি ভঙ্গ করেন তাহলে টুইটার মি. ট্রাম্পকে চিরস্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করবে ।
ট্রাম্পের টুইট অ্যাকাউন্ট স্থায়ীভাবে বন্ধ করার প্রতিক্রিয়ায় তার ২০২০ সালের ক্যাম্পেইন উপদেষ্টা জ্যাসন মিলার টুইট করেছেন “জঘন্য, আপনি যদি ভাবেন তারা পরবর্তীতে আপনার দিকে আসবে না তাহলে আপনি ভুল করছেন”।
শুক্রবারে সার্চ ইঞ্জিন গুগল- সম্পূর্ণ মুক্ত মতামতের প্লাটফর্ম ‘পার্লার’ স্থগিত করে, যেটা ট্রাম্প সমর্থকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পাচ্ছিল।
জানুনঃ
কানাডায় জব না ইমিগ্রেশন কোনটি আগে দরকার?
গুগল বলেছে “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলমান সহিংসতা উস্কে দিচ্ছে যেসব পোষ্ট, তেমন কিছু পার্লার অ্যাপ এ অনবরত পোষ্ট করা হচ্ছে সে সম্পর্কে আমরা সতর্ক আছি”।
মি. ট্রাম্পের টুইটার ব্লক করে দেয়া হয় শুক্রবার। জানা যায়, তিনি বুধবার বেশ কিছু টুইট করেন যেখানে ক্যাপিটল হিলে হামলাকারীদের “দেশপ্রেমিক” ও তিনি তাদেরকে ভালবাসেন এমন কথা বলা হয়।
তাছাড়াও অনলাইন ভিত্তিক বেশ কিছু প্ল্যাটফর্মে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। যেমন:
- ফেসবুক বলেছে তারা মি. ট্রাম্পকে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিষিদ্ধ করেছে।
- জনপ্রিয় গেমিং প্ল্যাটফর্ম টুইস্ট ট্রাম্পকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য নিষিদ্ধ করেছে। যেখান থেকে তার সমাবেশ প্রচারিত হতো।
- টুইটারে সরব ছিলেন ট্রাম্প সেখান থেকেও হলেন নিষিদ্ধ।
- স্ন্যাপচ্যাট থেকে তিনি আগেই নিষিদ্ধ হয়েছেন।
- ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেমোরিবিলিয়া বিক্রি করা দুইটি অনলাইন স্টোরকে এ সপ্তাহে নিষিদ্ধ করেছে ই-কর্মাস কোম্পানি শপিফাই।
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখা যেত টুইটারে তিনি তার প্রতিপক্ষদের অপমান করছেন, মিত্রদের উৎসাহিত করছেন, কর্মকর্তাদের হুটহাট করে চাকরিচ্যুতি করছেন ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
তিনি প্রায়ই ইংরেজি ক্যাপিটাল লেটার অর্থাৎ বড় অক্ষর ব্যবহার করতেন। এবং তার পয়েন্টটা নজরে আনার জন্য বিস্ময়সূচক চিহ্ন ব্যবহার করতেন।
যুক্তরাষ্ট্রে যে প্রক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়!
এ সম্পর্কে তার সমালোচকরা বলেন, সেইসব পোষ্ট ছিল ভুল-তথ্য প্রবাহ, এই মাধ্যম ব্যবহার করে তিনি মূলধারার গণমাধ্যমকে পাশ কাটিয়ে মুহূর্তের মধ্যে তার ৮৯ মিলিয়ন অনুসারীর সাথে যোগাযোগ করতে পারতেন।
তার টুইট ভুল বানানের জন্য পরিচিত ছিল।
কী ঘটেছিল সেদিন ?
আমেরিকার আইন-প্রণেতারা গত বুধবার যখন নভেম্বরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার জন্য অধিবেশনে বসেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শত শত সমর্থক তখন আমেরিকার আইনসভা কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটল-এ ঢুকে পড়ে।
কয়েক ঘণ্টা ভবন কার্যত দখল করে রাখার পর বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে ক্যাপিটল প্রাঙ্গণ ছেড়ে বাইরে চলে যেতে থাকে।
রাজধানী ওয়াশিংটনে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১২ ঘণ্টার কারফিউ ঘোষণা করা হয়; কিন্তু সান্ধ্য আইন শুরু হবার পরও শত শত বিক্ষোভকারীকে রাজপথে জটলা পাকাতে দেখা গেছে।
চিনের উহান আজ সারা বিশ্বের কাছে যেন এক বিশ্বয়!!
দুপুরের পরই আমেরিকার রাজধানীতে নাটকীয় দৃশ্যে দেখা যায় ;– শত শত বিক্ষোভকারী ভবনটিতে ঢুকে পড়ে আর পুলিশ কংগ্রেস সদস্যদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিচ্ছে।
কয়েক ঘণ্টা ভবন কার্যত দখল করে রাখার পর বিক্ষোভকারীরা ধীরে ধীরে ক্যাপিটল প্রাঙ্গণ ছেড়ে বাইরে চলে যেতে থাকে; ওই দিনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
- Published in Breaking News, Editorial, Events, FEATURED, আন্তর্জাতিক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র