একটা অ্যাড ছিল বেশকিছু দিন আগে। এক ভদ্রলোক শিঙাড়া খেল আর পেট ফুলে শার্টের বোতাম খুলে গেল! ব্যাপারটা কিন্তু কিছুটা বাস্তব; সমস্যা হচ্ছে আমাদের দেশে এই পেট ফুলে যাওয়ার সমস্যাকে সাধারণ মানুষ গ্যাস্ট্রিক বলে। গ্যাসের ট্যাবলেট খাওয়ার পর কিছু না খেলে কি কোনও সমস্যা হয়?

করোনা টিকার নোটিফিকেশন দিবে ফেসবুক 

গ্যাস্ট্রাইটিস কিংবা গ্যাস্টিক আলসার কি?

আগে জেনে নেই উপশম গুলি কি কি?

• সাধারণত নাভির ওপরে পেটে ব্যথা অনুভুত হয়।
• খালি পেটে কিংবা ভোর রাতের দিকে ব্যথার তীব্রতা দেখা যায়।
• গলা-বুক-পেট জ্বালা পোড়া করবে, টকটক ঢেকুর ওঠবে।
• ঝাল-তেল-মসলাজাতীয় খাবারে এগুলি ঝামেলা বেশি দেখা যায়।

আমাদের দেশের জনগনের একটা ভ্রান্ত ধারণা আছে যে কোনো পেটে ব্যথা মানেই গ্যাস্ট্রিক। তাই যে কোনো কারণেই পেটের সমস্যা হোক না কেন আমরা Loscetil/Seclo/Pantonix/Sergel/Maxpro/Probitor /PPI/Nuprazol/Esotid ইত্যাদি খেয়ে থাকি। লেখকের ধারণা মনে হয় সারা পৃথিবীতে এত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ অন্য কোনো দেশে খাওয়া হয় কিনা বলা মুশকিল।

দেখা যায়, প্রস্রাবের ইনফেকশনের জন্য তলপেটে ব্যথা করছে কিন্তু তার জন্য রোগী এ্যান্টি আলসারেন্ট সেবন করছে। আজব…..!

যাই হোক আলোচনা শুরু করেছিলাম পেট ফোলা নিয়ে; আমাদের দেশে মোট জনসংখ্যার ৭০-৮০ শতাংশ মানুষ যে কারণে অপ্রয়োজনীয় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ  খায় তা হচ্ছে..

• খাবার খেলে পেট ভরা ভরা লাগে,
• অস্বস্তি লাগে ক্ষুদা লাগে না।
• এক বেলা খেলেই মনে হয় ১ সপ্তাহের খাওয়া খেয়ে ফেলেছে।
• পেট ফুলে যায়।
• অনেকের তো ঢোল হয়ে যায়।
• শব্দ করে ডেকুর হয়।
• গ্যাস বের হয় মুখ দিয়ে ও পায়ুপথ দিয়ে।
• অনেকের গ্যাসওপরের দিকে চাপ দেয়;
• বুক ধড়ফড় করে ওঠে!
• এমনকি অনেকের শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও কষ্ট হয়!

পড়তে পারেনঃ  চিনের উহান আজ সারা বিশ্বের কাছে যেন এক বিশ্বয়!!

দুগ্ধ কিংবা দুগ্ধজাত খাবার (যেমন সেমাই, কাস্টার্ড, আইসক্রিম ইত্যাদি), আটা দিয়ে তৈরি করা খাবার (পরোটা, কেক, শিঙাড়া, পাউরুটি ইত্যাদি) আর মশুরের ডাল খেলে সাধারনত এমন সমস্যা সমুহ বাড়ে বলে দেখা যায়।

মুল কথা উপরের কোন উপশম বা লক্ষণই আমাদের ভাষায় প্রচলিত গ্যাস্ট্রিক না। এখানে পেটে অনেক বেশি গ্যাস তৈরি হয়। এসব ক্ষেত্রে Omeprazole, Esomeprazole, lansoprazole, Rabeprazole এর কোনো ভূমিকা থাকে না।

পড়তে পারেনঃ  আপনার অজান্তেই মোবাইলের টাকা খোয়া যাচ্ছে না তো!!

অতিরিক্ত এবং অপ্রয়োজনীয় গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনের কুফল?

প্রয়োজন ছাড়া কারনে অকারনে যারা দিনের পর দিন গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে যাচ্ছেন তাদের জন্য ভবিষ্যতে যে যে সমস্যা দেখা দেবে তা হলো শরীরে আয়রন, ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়ামের অভাব দেখা যাবে।

এমনকি হাড় ক্ষয়, অল্প আঘাতেই হাড় ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনার সঙ্গে  প্রবণতা দেখা দিবে।  সেই সঙ্গে শরীরে কিছু রোগজীবাণু প্রবেশের সক্ষমতা বেড়ে যাবে। এমনকি কিডনিতে মারাত্মক সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

পড়তে পারেনঃ  কিস্তিতে মোটরসাইকেল কিনতে যেসব বিষয় জানা জরুরী!

উপদেশঃ  নিজের রোগ সম্পর্কে সম্মুখ ধারণা রাখুন। অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করুন। প্রয়োজন ছাড়া  ওষুধ ব্যবহার পরিহার করুন।

সুস্থ থাকুন।

গ্যাসের ট্যাবলেট খাওয়ার পর কিছু না খেলে কি কোনও সমস্যা হয়?